ম্যানো-বট লাভ হিস্টোরি

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

আহমাদ মুকুল
  • ৪২
  • ১৫
-কসম খোদার, এই কাম আমি করি নাই। আমি আপনার ‘লাভ বটিকা’ কস্মিনকালে দেখি নাই। নিমু কই থেইকা?

-দেখ রবইট্টা, মিছা কথা কবি না!....একে তো করছে চুরি, শিনাজুরির উপর দিয়া আবার কঠিন বাংলা শব্দ কপচায়!

-আপনে আমারে খামাখা দোষের তলে ফেলতাছেন। যন্ত্র বইলা আমাগো কি মান সম্মান নাই? (চোখ বেয়ে কয়েক ফোঁটা জল পড়ে মফিজ-১১৩ এর।)

-বুঝামুনে খাড়া…..

স্বপ্নে প্রাপ্ত ওষুধের কৌটো হারিয়ে পুরাপুরি বেদিশা মি. মাকাল। গতকাল স্বপ্নে এক দেবদূত এসে অনেক মাখামাখি করে গেছে আইবুড়ো মাকালের সাথে। নানান ধরণের প্যাঁচাল, হাসিঠাট্টা….ভাসাভাসা, কিছুই স্পষ্ট মনে পড়ছে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা গোলাপী কৌটা পায় সিথানে। সে নিশ্চিত ঘুমানোর আগে ওখানে কিছু ছিল না। কৌটার গায়ে সবুজ কালিতে লেখা- ‘লাভ-বটিকাঃ খাইলেই টের পাইবেন’।

তার গৃহপরিচারক মফিজ-১১৩। ২০২২ মডেলের হাউজ সার্ভিস বট, ‘মফিজ’ সিরিজের দ্বিতীয় প্রজন্মের যন্ত্র এটি। হাল আমলে এগুলোকে কেউ বুদ্ধিমান যন্ত্র হিসেবে মানবে কিনা সন্দেহ। ভাঙ্গারির দোকানে লোহা-লক্কড় হিসাবে ঢের মেলে এসব। হাড়কিপ্পন মাকাল সাহেব ওখান থেকেই একটা জোগাড় করে মরচে ধরা জয়েন্টগুলোতে তেল টেল মেরে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। গত বেশ কটি বছর ধরে ঘাটের মড়া পুং-বট মফিজই তার একমাত্র সঙ্গি।

দেখতে চাল-চলনে বলদ মার্কা হলে কী হবে, বাস্তবে মফিজ ব্যাটা অতি ঘোড়েল। তলে তলে সে বেশ আপডেটেড। মাথাটা একটু মোটা হলেও মালিকের অগোচরে নিজে থেকেই অনেক আধুনিক হয়ে উঠেছে। বিস্তর পড়াশুনার অভ্যেস তার। বুদ্ধিমান যন্ত্র হিসেবে যৌবনকালে সে এক বিজ্ঞানের অধ্যাপকের সাথে কাজ করতো। সেখান থেকে বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য বিষয়ক জার্নাল পড়ার অভ্যেসটি রপ্ত করেছিল। যন্ত্রের কোন শৈশব, যৌবন, বার্ধক্য নেই। এগুলো মানুষের ব্যাপার স্যাপার, যন্ত্রের হলো দুই কাল- সচল কাল আর অচল কাল। সেই নীতিতে ‘সচল’ হিসেবে নিজেকে চিরযৌবন ভাবে মফিজ।

‘মানবীয় দোষ-ত্রুটি’ নামের উনবিংশ শতাব্দীর এক কাগুজে বই সম্প্রতি সে এক পেপার লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করেছে। পুরণো বইয়ের হার্ডকপি সংগ্রহ করা আজকাল অনেক ঝক্কির ব্যাপার। কিছু কিছু আর্কাইভে দূর্লভ বই এন্টি-স্ক্যানিং করে রাখা হয়। লাইব্রেরিতে বসে কিছুটা পড়তে পেরেছিল সে। সেইটুকু থেকে পাওয়া বিদ্যা প্রথমেই কাজে লাগায় বুড়ো লাইব্রেরিয়ানের উপর। ‘উৎকোচ’ দিয়ে পুরো বইটি স্ক্যান করে নিতে পেরেছে।

১০৩৫টি অনুচ্ছেদের মধ্যে বেছে বেছে পড়ছে সে। বড়ই কঠিন এই মানব মনবিদ্যা। প্রাকৃতিক ‘বুদ্ধিমত্তা’ পড়তে গিয়ে তার যতটুকু কৃত্রিম বিদ্যা ছিল তাও যাবার যোগার হলো। বুদ্ধির রকমফের ধরতেই তার ব্রেন এলোমেলো হয়ে যায়- বুদ্ধি, চালাকী, চাতুর্য, ধূর্ততা, শঠতা….ইতিবাচক নেতিবাচক কত রকম বুদ্ধির মেলা! ‘চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা’- এই অনুচ্ছেদটি তার মন কেড়ে নেয়। যদিও ব্যাপারগুলো বুঝতে তাকে বেশকিছু সাবসিডিয়ারি সেন্স ডাউনলোড করতে হয়।

বিদ্যাটিকে হাতে-কলমে চর্চা করতে গিয়ে ধরা পড়ে বেশ কয়েকবার রদ্দা খেয়েছে মালিকের হাতে। তার বোধে রদ্দা মানে হলো গিয়ে ঘাড়ে মেটালিক আঘাত এবং ফলশ্রুতিতে কপোট্রনে ইলেকট্রিক স্পার্ক। সাজাটি যতটা না কষ্টদায়ক, তার চাইতে অপমানজনক মনে হয়েছে মফিজের। তাই চুরি বিদ্যায় সফলতার পূর্বশর্ত হিসেবে ‘মিথ্যে’ বলার শক্তিটি সে হাসিল করেছে গতকাল। যার কারণে মালিকের ‘লাভ-বটিকা’ লোপাট করে অবলীলায় অস্বীকার করতে পারলো আজ সকালে। ওহ বলা হয় নি, তছরূপ মাল ‘সেথানো’ মানে অন্যত্র লুকিয়ে রাখার কায়দাটিও সে জেনে ফেলেছে এর মধ্যে।

তবে একটু ধন্দে পড়লো সে, সামান্য একটা কৌটা নিয়ে মালিক এতো পেরেশান হলো কেন আজ? ব্যয় সংকোচন কিংবা সাশ্রয় ছাড়া অন্যকিছুতে মাকাল সাহেবের নজর আছে বলে তো তার ক্ষুদ্র স্মৃতিতে ধরা পড়ে না! যাই হোক, ব্যাটাকে আজ সকালে নাকাল করতে পেরে বেশ খুশি মফিজ। ‘‘রোবইট্টাই কানলো কেমতে….?’’ বিস্ময়মাখা প্রশ্ন নিয়ে বিড়বিড় করতে করতে মাকাল মিয়া চলে যাওয়ার সময় মফিজ চরম মজা পায়। ব্রেইন কুলিং ওয়াটার বিশেষ কৌশলে সরিয়ে এনে চোখ দিয়ে দু’তিন ফোঁটা ঝেরে দিতেই মাকাল মিয়া কাত!

দুই।
বাইরে কাজ টাজ সেরে মাকাল সাহেব বাসায় ফিরলেন। সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে মফিজকে বেশী দুধ চিনি দিয়ে চা বানিয়ে আনতে বললেন। মফিজ কিছুটা বিচলিত হলো, খরচ বাঁচানোর জন্য প্রায় সময়ই চায়ের নামে শুধু গরম পানি চুমুক দিয়ে খায় তার মালিক। তার মতে চা-কফি হলো মানসিক পানীয়। সময় কাটানো কিংবা ভাবনার সময় মানুষ বৃথাই এতে চুমুক দেয়। তাই যদি হবে, খামাখা দুধ চিনি কিংবা টি’মেট-এর নামে খরচ বাড়িয়ে লাভ কী? পারলে জ্বালানী খরচ বাঁচানোর জন্য গরম পানির বদলে ঠান্ডা পানি ফুঁ দিয়ে সুড়ুত সুড়ুত করে টানে।

যে ভয় পেয়েছিলো মফিজ, চা শেষ করে মালিক ওকে গম্ভির গলায় কাছে ডাকলেন। ভাবগতিক ভাল ঠেকছে না। নানান কাজের বাহানায় কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করলো সে। মালিককে কাছে এগিয়ে আসতে দেখে বিপদ টের পেল। ছাদের কোণার ঝুল পরিষ্কারের নামে স্পাইডার লেগ ব্যবহার করে দেয়াল বেয়ে উপরে উঠে পড়লো।

-পলাইবি কই? তোর সুতার গিট্টু তো আমার হাতে। নাইমা আয় জলদি!’’ খেকিয়ে শাসায় মালিক।

-আপনের মতলব ভালা ঠেকতেছে না।’’ সেল্ফ ডিফেন্স মোড ব্যবহার করে মালিকের নির্দেশ অমান্য করলো মফিজ।

কিছু শব্দ এবং সংখ্যা মিলিয়ে জটিল একটা বাক্য উচ্চারন করলো মাকাল মিয়া। মালিকের একান্ত ব্যবহার্য ব্রহ্মাস্ত্র ‘রোবট বশ কোড’। আর যায় কোথায়, সুড়সুড় করে নেমে এসে সুবোধ বালকের মত সামনে দাঁড়ালো মফিজ। ম্যানুয়েলি ডি-এক্টিভেট করার জন্য ওটার কাছে গিয়ে কেমন একটা ‘ডিপ ডিপ’ আওয়াজ শুনতে পেলো সে। বুক বরাবর প্যানেল খুলে দেখে, তাজ্জব ব্যাপার! টকটকে লাল বেলুনের মত একটা খেলনা হৃদপিন্ড সেখানে।…..হাসতে বাধ্য হয় মাকাল মিয়া। ওর ছেলেমানুষী দেখে মাফ করে দিল এবারের মত। প্যানেলটি আগের মত সেট করে ডি-এক্টিভেট অবস্থাতেই রেখে দিল।

এই ফাঁকে মফিজের রুম তন্ন তন্ন করে খুঁজলো মাকাল। ওর স্লিপিং স্টুলের পেছনেই পেয়ে গেল ইস্পিত জিনিসটি। গোলাপী কৌটা খুলে দেখলো, কয়েকটি বড়ি মনে হয় কম। পকেটস্থ করে বেরিয়ে এসে মফিজকে আবার চালু করে দিল। কিছুই হয়নি এমন ভাব নিয়ে মফিজ আবার ঘরের কাজে লেগে পড়লো।

তিন।
মনিটরের সামনে গভীর মনোযোগ নিয়ে বসে আছে মফিজ। জিনিয়া’র কোন সাড়া শব্দ নেই আজ। মুখ ভার করে লুকিয়ে আছে হয়তো কোথাও। মান ভাঙাতে হবে।

-জিনিয়া গো জিনিয়া, কোথায় গো মুনিয়া
দেখো….ব্যাচেন এই মফিজে, লাভ নাকি ম্যানিয়া….’’ কিম্ভূত সুরে গেয়ে ওঠে।
¬
তাও লা-জবাব জিনিয়া। ‘‘এই দেখো তোমার প্রিয় টকটইক্কা লাল পাঞ্জাবি পড়ছি’’….মফিজ তার ক্লাউন মার্কা ঢলঢলা হাতা খেংড়াকাটি সূরত দেখায়। এবার মান ভাঙে প্রেয়সীর। রসালাপে ব্যস্ত হয় দুইজনে। কত রংয়ের ঢংয়ের সংলাপ, দেখলে আক্কেল গুড়ুম হতো বেরসিক মাকাল মিয়ার। একের পর এক ফুল, প্রজাপতি, প্রেমের বাজনা-বাদ্যির আওয়াজ ভরা থিমে রঙিন হতে থাকে স্ক্রিন।

ওদিকে লাভ-বটিকার কৌটা নিয়ে বসেছে মাকাল। একটা বড়ি সেবন মাত্র….‘আঁক’ করে চিৎকার দিয়ে ওঠে সে। পেছনে ফিরে দেখে পশ্চাদদেশে একটা তির বিধে আছে, বাতাসে নড়ছে। খোলা জানালা দিয়ে আবছা একটা মূর্তি উড়ে গেলো।‘‘….ওরে মোর খোদা….এ দেখি কিউপিড!’’ কিউপিডের পিছু পিছু জানালা দিয়েই ছুটতে গেছিলো সে। কোনভাবে নিজেকে সামলে সদর দরজা দিয়ে রাস্তায় নামে।…..হানি….হানি...উম্মেহানি….বলে চিৎকার করতে করতে উর্দ্ধশ্বাসে পাশের লেডিজ ডর্মেটরির দিকে ছুটলো মাকাল মিয়া।

ভাঙা সম্পর্কটিকে সাধারণ ঝালাই না, এক্কেবারে টাইটানিয়াম কোটিং দিয়ে আটকে নিলো। পুরোদস্তুর দিন-তারিখ ঠিক করে বাসায় ফিরলো মাকাল মিয়া। বাংলা ফাল্গুন, ইংরেজী ফেব্রুয়ারী, ইউনিভার্সাল আর.ভি.এস.কিউ পিরিয়ডের ১ম শনিবার উম্মেহানি বেগম মাকালের ঘরে একেবারে চলে আসবে।

চার।
চায়ের মধ্যে চিনি না দিয়ে লবন দিলে মেনে নিতো মাকাল মিয়া। স্বাদ যাই হোক, লবনের দাম তো কম! ….স্বাদ কটু হইলেও খরচ তো বাড়ে নাই! কিন্তু এই ব্যাটা গরম পানিতে ঈস্ট গুলিয়ে নিয়ে এসেছে।….মনটি প্রেমে ভরপুর ফুরফুরা তার, তাই এইবেলা কিচ্ছু বললো না মফিজকে। নিঃশব্দে চা’টুকু ফেলে দিয়ে গোসলে গেল সে। শাওয়ার ছাড়া মাত্র পানির ছ্যাকা খেয়ে লাফ দিয়ে সরে গেল দুই হাত। এই গরমে মালিকের গোসলের জন্য পানি ফুটিয়ে রেখেছে মফিজ!

ওর বেখেয়ালী কান্ড আর সহ্য করা যায় না, ‘‘প্রেমে বাউলা মফিজ্যা হালায় আমারে জানে মারার জোগাড় করছে’’….গজগজ করতে থাকে, ‘‘লাই পাইয়া মাথা ছাইড়া চান্দের দেশে পৌছাইয়া গেছে রোবইট্টা, ওরে কঠিন টাইট দিতে হইবো।’’ সে দিব্য চোখে দেখতে পায় একটি জলজ্যান্ত প্রেমরোগী হাউজ-বট ঘুরে বেড়াচ্ছে তার আশে-পাশে। ওটাকে শিল্পিত কায়দায় শিক্ষা দেয়ার প্ল্যান করে সে।

রাতে এখন নিয়মিত সেই দেবদূত আসে। খাতিরও হয়ে গেছে ওদের। মাকাল মিয়া ওঁটিকে ‘ভাতিজা’ বলে ডাকে। আল্লাদের ডাক, তেমন গা করে না দেবদূত। মাকাল বুঝিয়ে সুঝিয়ে তার কাছ থেকে এক কৌটা ‘হিংসা বটিকা’ আদায় করে। তারপর এক সময় মফিজের জন্য ফাঁদ পাতে। ‘লাভ বটিকা’র কৌটা খালি করে ‘হিংসা বটিকা’ ভরে রাখে। আসল ভালবাসার বড়িগুলো লুকিয়ে ফেলে। মালিক বাইরে গেলে মফিজ যথারীতি এসে তার নিয়মিত লাভ ডোজ নিয়ে যায়। পরিণতিটি হয় দেখার মত।

মনিটরের সামনে জিনিয়ার অপেক্ষায় মফিজ, ‘শালার বেটি, না জানি আবার কোন নাগর ধরছে!’

-হাই ফিজু…..’’ জিনিয়া কলকলায়।

-আমারে ওয়েটিং রাইখা কই ছিলি, আবাগী?

-মুখ সামলে কথা বলো, মফিজ!

-কিসের মুখ সামলামু তর লগে! হাজার লোকের সাথে লদকা লদকি করছ, ইনফো-বট কোথাকার?

-হ’ আমি ইনফো-বট হই আর চ্যাটার-বট হই, তর কী? আর তুই ই বা কোন লাটসাব? খানসামা, লোহার জংগল কোথাকার!

-দেখ, খুজলি ভাইরাস পাঠামু কইলাম তর লাইগা….

-পাঠাইয়া দেখ না, তর জয়েন্টে ওয়াসার পানি ঢাইলা জং ধরাইয়া দিমু….শত হইলেও জেন্ডারে মাইয়া আমি, কম কায়দা জানি?

কি-বোর্ডে হাত দিতেই কারেন্ট শক খায় মফিজ। পুরো মেশিন ইলেকট্রিফায়েড করে দিয়েছে। ….ছেমড়ি অতি বজ্জাত! প্রিয়ার হাতে চড় খাওয়ার মত অনুভূতি হলো মফিজের। অবধারিত ব্যাপার……ব্রেক-আপ হয়ে গেল।

পাঁচ।
এরপর ঘটনা খুব দ্রুত এগুলো। উম্মেহানিকে বরণ করার প্রস্তুতিতে মাকাল ডুবে থাকলো কয়েক দিন। মফিজ আগের মতো মালিকের সেবায় মনপ্রাণ ঢেলে দিলো। মালিকের বাসর ঘর সাজানো আর নতুন বউয়ের স্বাদ রুচি জেনে নিয়ে নিত্য নতুন খাবার তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত হলো। তবে কাজের ফাঁকে ওর বিষণ্ন মুখ দেখে মাকালের কঠোর মন গললো এক সময়। বেদনাহত চেহারাটি অনেক কায়দা-কানুন করে ফুটিয়েছে মফিজ- মাকাল তা জানবে কোত্থেকে?
¬¬¬¬
বিয়ের আগের রাতে মাকাল জেগে থাকা অবস্থায় দেবদূত ছেলেটি শেষবার আসলো। সবকিছু খুলে বললো- সে আসলে কোন দেবদূত নয়, ভবিষ্যত মানব! ঠিক টাইম মেশিনে চড়ে নয়, সময়ের মাত্রায় ভর করে বিশেষ কৌশলে তার ইত্যাকার ভ্রমন। মাকালেরই জেনারেশন হায়ারার্কি’র তিন’শ বছর পরের পুরুষ সে। একজন রোমান্টিক মানুষের ভবিষ্য প্রতিভূ হওয়ার আশায় সে তার পর-দাদার সাথে খেলাটি খেলেছে।

মাহেন্দ্র ক্ষণ এলো। উম্মেহানির গৃহ প্রবেশ ঘটলো। তার আগের আবাসের নিত্য প্রয়োজনীয় লটবহরের সাথে একজন ব্যক্তিগত সহচরী নিয়ে আসলো নতুন বউ। অপূর্ব সুন্দরী একজন এসিসটেন্ট। এই সৌন্দর্য যতটা না মানবীয়, তার চাইতে অনেকগুণ রোবটিয়। ওকে দেখে মফিজের কপোট্রনে বয়ে যাওয়া হাজার ভোল্টের ইলেকট্রন প্রবাহে উত্তাপ বাড়তে থাকলো….লাল বেলুনটি ধাতব বুক ভেদ করে বের হয়ে আসার জোগাড়!

‘‘….মাই ফিজু’’ জিনিয়ার মধুর ডাকে মাথা ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেল মফিজের। উথাল পাথাল বটিয় প্রেমকীর্তি দেখে লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিলো প্রেমিক মানব জুটি।

মাকাল-হানি প্রেমিক জুটি গত কয়েক দিনের পরিকল্পণায় ইনফো-বট জিনিয়ার জন্য একটি উন্নত বায়ো-বট শরীর জোগাড় করতে পেরেছিলো। বিয়ে দিয়ে যদি বখাটে রোবটটাকে ভাল করা যায়। এর মাঝে অবশ্য ‘কু-বুদ্ধি পরিহারক’ দিয়ে ভালমতন ধুয়ে মুছে নিয়েছে মফিজের পুরো সিস্টেমকে।

শেষ।
নিজের জীবনের এই পরিবর্তনের কাহিনীটি বাংলায় লিখে ইউনিভার্সাল ল্যাংগুয়েজে কনভার্ট করে ‘ভাতিজা’কে পাঠিয়েছিলো (পর-নাতিকে এখনো এই নামেই স্মরণ করে সে)। ‘টাইম ইনডিফরেন্ট মেইল’ পাঠানোর প্রযুক্তি ‘ভাতিজা’ই দিয়ে গিয়েছিল তাকে। কিছুদিন পরে এক অজানা লেখকের নামে প্রকাশিত গল্পটি এক বৈশ্বিক পত্রিকায় পড়ে সে। মূল চরিত্রটির নাম ‘মাকাল’ হয়ে গেলো কিভাবে, অবাক হয়। আসলেই কি সে এক অন্তঃসারশূন্য মানুষ! অনেক ভেবেচিন্তে….বাংলা থেকে ইউ-ল্যাংগ এবং ইউ-ল্যাংগ থেকে বাংলায় কনভার্ট রি-কনভার্ট আর উচ্চারণ বিভ্রাটে নিজের নামের মাকালীয় পরিবর্তনের কারণটি অবশেষে ধরতে পেরে হো হো করে হেসে ফেললো।

(এই অনুচ্চারিত রহস্য ভেদের দায়িত্বটুকু পাঠকের জন্য বরাদ্দ থাকলো।)
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ জিনিয়া গো জিনিয়া, কোথায় গো মুনিয়া দেখো….ব্যাচেন এই মফিজে, লাভ নাকি ম্যানিয়া ------ মুকুল ভাই অসাধারন হয়েছে । কাহিনী খুব সুন্দর আর চমৎকারিত্বে ভরা । শুভ কামনা জানবেন ।
তানজিয়া তিথি আপনের মতলব ভালা ঠেকতেছে না।’’ সেল্ফ ডিফেন্স মোড ব্যবহার করে মালিকের নির্দেশ অমান্য করলো মফিজ। ---- বিজ্ঞান যে আরও কত দূর যাবে তা এই সংখ্যার গল্প গুলো পড়লেই বুঝা যায় !ধন্যবাদ ভাইয়া ।
তানি হক ভাইয়ার গল্পটি দেরিতে পড়তে আসলাম ...বরাবরের মতই দারুন একটি গল্প পড়লাম ..খুব খুব ভালো লাগলো ...সুভেচ্ছা আর সালাম রইলো ভাইয়ার জন্য
বিন আরফান. হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা হাহাহা
আজব তো! এত তেল (খাঁটি সরিষার) মারা কমেন্ট করেও লাইক পাই না! আর খালি 'হাহাহা' করে আরফান ভাই দুই দুইজন 'পছন্দ করুন' বাটনে সহজে ক্লিক না করা ব্যক্তির পছন্দের হয়ে গেল!!! :p
তাইতো আপনার পোস্টে একজনের পছন্দের তালিকায় বেশি যোগ হয়েছে. // সূর্য , বিন আরফান., এবং রোদের ছায়া পছন্দ করেছেন।
সূর্য , বিন আরফান., রোদের ছায়া, এবং আহমাদ মুকুল পছন্দ করেছেন।
সেলিনা ইসলাম বৈজ্ঞানিক কল্পনায় যে এতো রম্য আনা সম্ভব তা গল্পটা না পড়লে অজানাই থেকে যেত...অসম্ভব সুন্দর গল্প । শুভকামনা
বশির আহমেদ অনন্য অসাধারণ ।
আসন্ন আশফাক অনেক দিন পর গল্পকবিতায় এসেই আপনার গল্পটি পড়লাম, অকালে মাকাল (একদম কামাল)
মোঃ সাইফুল্লাহ কল্পকাহিনীর চমৎকার রম্য গল্প। খুব ভালো লিখেছেন।
সিয়াম সোহানূর বাক্যগুলোর অন্যরকম আমেজ আছে । দারুণ পুলক অনুভব করি। এরই মাঝে চেতনার মন্ত্রও খুঁজে পাই । আর মন ভরে যায় ।
নাজনীন পলি আপনার লেখা পড়ে অনেক মজা পেলাম তাই প্রিয়তে রাখলাম ।

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪